রোজা ভঙ্গের ১৯ টি কারণ ! রোজা নিয়ে আরও কিছু প্রশ্নের জবাব !

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!

যে সমস্ত কারণে রোযা শুরু করার পর ভেঙ্গে ফেলার অনুমতি রয়েছে, তবে পরে ক্বাযা আদায় করতে হয়

০১. সফর অবস্থায় খুব কষ্ট হলে।

০২. অসুস্হ অবস্থায় ঔষুধ সেবন না করলে প্রাণ নাশের আশংকা হলে।

০৩. দুগ্ধ দায়িনী স্ত্রীলোকের নিজের বা দুগ্ধ শিশুর জীবনের ব্যাপারে আশংকা হলে।

০৪. বৃদ্ধাবস্থায় রোযা রাখার কারনে মারাত্মক দুর্বল হয়ে জীবনের ব্যাপারে আশংকা হলে।

০৫. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য।

০৬. বেহুঁশ বা পাগল হয়ে গেলে।

০৭. রোগ বেড়ে যাওয়ার বা নতুন কোন রোগ সৃষ্টি হওয়ার আশংকা হলে । ( তবে তা দ্বীনদার, পরযেগার, অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হতে হবে)

০৮. গর্ভ অবস্থায় নিজের বা সন্তানের প্রাণ নাশের আশংকা হলে।

০৯. এমন পিপাসা বা ক্ষুধা যাতে প্রাণের আশংকা হয়।
( কেহ যদি অন্যকে দিয়ে কাজ করাতে পারে, বা জীবিকা অর্জনের জন্য অন্য কোন কাজি করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও টাকার লোভে এমন কাজ করল, যার কারনে ক্ষধা বা পিপাসায় আক্রান্ত হল, তাহলে তাঁর রোজা ছাড়ার অনুমতি নাই )

যে ৫ দিন রোযা রাখা হারাম

১. ঈদুল ফিতরের দিন

২. ঈদুল আযহার দিন

৩. ১১, ১২ ও ১৩ই জিলহজ্ব অর্থাৎ ঈদুল আযহার পরের তিন দিন, এই মোট ৫ দিন রোযা রাখা হারাম।

রোযা ভঙ্গের কারণ

০১. কানে বা নাকে ঔষুধ দিলে।

০২. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করলে বা অল্প বমি আসার পর তা গিলে ফেললে।

০৩. কুলি করার সময় অনিচ্ছা বশত কন্ঠনালীতে পানি চলে গেলে।

০৪. স্ত্রী বা কোন নারীকে শুধু স্পর্শ প্রভৃতি করার কারনেই বীর্যপাত হয়ে গেলে।

০৫. এমন কোন জিনিস খেলে যা খাদ্য নয় যেমন : কাঠ, লোহা, মাটি, কয়লা ইত্যাদি।

০৬. বিড়ি সিগারেট বা হুক্কা সেবন করলে।

০৭. আগরবাতি প্রভৃতির ধোয়া ইচ্ছাকৃত ভাবে নাকে বা কন্ঠনালীতে পৌছালে।

০৮. ভুলে পানাহার করার পর রোযা ভেঙ্গে গেছে মনে করে কোন কিছু পানাহার করলে।

০৯. রাত আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পরে কিছু খেলে।

১০. ইফতারীর সময়ের পূর্বে সময় হয়ে গেছে মনে করে ইফতারী করলে বা কিছু খেলে।

১১. দুপুরের পরে রোযার নিয়ত করলে।

১২. দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে তা থুথুর চেয়ে পরিমানে যদি বেশি হয় এবং কন্ঠনালীতে চলে যায়।

১৩. কেহ জোর পূর্বক রোযাদারের মুখে কিছু দিলে এবং তা কন্ঠনালীতে চলে গেলে।

১৪. দাঁত কোন খাদ্য টুকরো আটকে ছিল, তা সুবহে সাদেকের পর জিহ্বা অথবা আঙ্গুলি দ্বারা বের করে গিলে ফেললে। ( তবে যদি ছুলা বুটের চেয়ে ছোট হয় এবং মুখের ভিতর হতে বের না করে তাহলে রোযা মাকরুহ হবে ভাঙ্গবে না )

১৫. হস্তমৈথুন করে বীর্যপাত ঘটালে।

১৬. পেশাব বা পায়খানার রাস্তায় ঔষুধ, পানি, তৈল বা ভিজা আঙ্গুল প্রবেশ করালে। অথবা শুকনো আঙ্গুল পুরোটা প্রবেশ করিয়ে পুরোটা বা টিছুটা বের করে আবার প্রবেশ করালে।

১৭. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে গেলে এবং এ অবস্থায় সু্বহে সাদিক হয়ে গেলে।

১৮. নস্যি গ্রহন করলে বা কানে তেল ঢাললে।

১৯. রোযার নিয়ত ব্যতীত রোযা রাখলে।

২০. স্ত্রীর বেহুশ, অচেতন বা ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর সাথে সহবাস করলে স্ত্রীর উপর শুধু কাযা ওয়াজিব হবে।

২১. নফল রোযা রেখে ভেঙ্গে ফেললে।

২২. এক দেশে রোযা শুরু করে অন্যদেশে চলে গেলে সেখানে যদি নিজের দেশের তুলনায় আগে ঈদ হয়ে তাহলে নিজের দেশের হিসাবে যে কয়টা রোযা কম হবে তা কাযা করতে হবে। আর যদি বেড়ে যায় তাহলে সে বেড়ে যাওয়া রোযা রাখতে হবে।

রোজার নিয়ত

আরবি নিয়ত : নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

ইফতারের দোয়া

ইফতারের আগ মুহূর্তে দোয়া

أَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيمَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ

(আরবি উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।)

**বাংলা অর্থ:** “আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি মহান আল্লাহর কাছে, যিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক। আমি তাঁর দিকেই তাওবা করছি। কোনো কিছু পরিবর্তন করার শক্তি বা ক্ষমতা নেই, মহান ও সর্বোচ্চ আল্লাহ ছাড়া।”

ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোয়া

اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ، بِرَحْمَتِكَ يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ

(আরবি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।)

**বাংলা অর্থ:** “হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্যই রোজা রেখেছি এবং তোমার দেওয়া রিজিক দিয়েই ইফতার করছি। হে সর্বাধিক দয়ালু, তোমার রহমতেই আমি ইফতার করছি।”

ইফতারের পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে দোয়া

ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ

(আরবি উচ্চারণ: জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।)

**বাংলা অর্থ:** “পিপাসা দূরীভূত হয়েছে, শিরা-উপশিরা সিক্ত হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ সওয়াব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”

রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় সচেষ্ট হোন
আর নিয়মিত জ্ঞানের জন্য ভিজিট করুন

Trickus 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!

যতবার দেখা হয়েছে 400
Avatar photo
S.M.YAMIN HASAN

আমি S.M.YAMIN HASAN ।

Articles: 14
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Inline Feedbacks
View all comments
smart.tips
Member
1 month ago

সুন্দর পোস্ট ভাইজান